বিজয় সাহা একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। জন্মগতভাবে তার একটি পা বাঁকা ও অকার্যকর এবং সহায়ক উপকরণ নিয়ে তাকে চলাফেরা করতে হয়। প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে পরিবার ও সমাজে অবহেলা ও বঞ্চনা শিকার হতে হয়েছে, সাথে ছিল পরিবারের আর্থিক অনটন। বিজয় সাহার জন্ম বাংলাদেশের স্বাধীনতার বছরে। মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে মাত্র ৪/৫ মাস বয়সেই শরনার্থী হিসাবে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নেয়। দেশ স্বাধীনের পরপরই তার পরিবার দেশে ফিরে আসে এবং তাদের পরিবারে বসতভিটা ছাড়া বাকী কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। শারীরিক প্রতিবন্ধীকতার সহিত খুব কম বয়সে পিতার মৃত্যের কারণে সংসারের হাল তার কাঁধে এসে পড়ে। অভাবের তাড়নায় সে মাঝে মাঝে ভিক্ষাবৃত্তিতেও জড়িয়ে পড়ে। অন্ধকারে আশার আলো স্বরুপ সমাজসেবার প্রতিবন্ধী ও দগ্ধ প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনের জন্য পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়। ২০০৪ সালে তাকে ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা ঋণ প্রদান করা হয়। ঋণ নিয়ে সে চটি/স্যান্ডেলের ফেরি বা ভ্রম্যমাণ ব্যবসায়ী হিসাবে শুরু করে। তারপর বটিয়াঘাটা হাটে একটি দোকান নিয়ে বিনিয়োগ করে ব্যবসায় ভালো করতে থাকে। যার কারণে তাকে পরবর্তীতে ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা ঋণ প্রদান করা হয়। নিঃস্ব হয়ে পড়া ও ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়া বিজয় সাহা তার লাভের টাকা দিয়ে ৫ (পাঁচ) শতক জমিও ক্রয় করেছেন। করোনার কারণে তার দোকান ০২ (দুই) বছর বন্ধ থাকায় এবং তার একমাত্র পুত্র সন্তান বিষাক্ত সাপের কামড়ে মৃত্যুবরণ করায় সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। জন্ম থেকে দীর্ঘ শ্বাপদসঙ্কুল পথ পাড়ি দেওয়া বিজয় সাহা আবার ঘুরে দাড়িয়েছেন। সফলতার গল্পে জীবন যুদ্ধে সংগ্রামী বিজয়ী বিজয় সাহা, যে সমাজসেবা থেকে ঋণ নিয়ে সফল ব্যক্তিদের অন্যতম।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস